Thursday, June 5, 2014

বিষপান করলেন খালেদ বিন ওলীদ (রাঃ)

বিখ্যাত সাহাবী হযরত খালেদ বিন ওলীদ (রাঃ) সিরিয়ার একটি কেল্লা ঘেরাও করে রেখেছেন। দীর্রদিন অবরোধের পর কেল্লাবাসী অবশেষে অবসন্ন হয়ে পড়লো এবং সন্ধি করতে রাজী হয়ে গেলো। তারা সন্ধি করার জন্য তাদের দলপতিকে খালেদ বিন ওলীদ (রাঃ) এর নিকট পাঠালো। দলপতি হযরত খালেদ বিন ওলীদ (রাঃ) এর নিকট এসে পৌঁছলো, তখন খালেদ (রাঃ) লক্ষ্য করলেন দলপতির হাতে ছোট্র একটি শিশি। খালেদ (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, এই শিশির মধ্যে কি ? এটা কেনো এনেছ? সে বললো, এই শিশিতে বিষ। এটা আমি এজন্য সাথে নিয়ে এসেছি, যদি সন্ধী   আলোচনায় সফলকাম হই তাহলে তো আনন্দচিত্তে আমি আমার সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে যাবো। আর যদি ব্যর্থ হই তাহলে আমি আমার ব্যর্থ মুখ আমার জাতিকে দেখাবো না। এ বিষ পান করে মরে যাবো। সাহাবায়ে কেরামের মূল মিশন ছিলো দ্বীনি দাওয়াত। দলপতি একথা বলার পর হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ) ভাবলেন, ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার সূর্বণ সুযোগ। এই ভেবে তিনি দলপতিকে বললেন,
তুমি কি মনে কর- এ বিষ পান করলে একজন মানুষ সঙ্গে সঙ্গে মারা যাবে? দলপতি বললো, অবশ্যই। এ বিষয়ে আমি একশত ভাগ বিশ্বাসী।
কারণ এটা এমন কঠিন বিষ, যার সম্পর্কে চিকিৎসকগণও বলেছেন, 

আজ পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি এ বিষের স্বাদ আস্বাদন করে তার প্রকৃত রূপ আবিস্কার করতে পারেনি। কারণ এর বিন্দু পরিমাণও যদি কারও পেটে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।
হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ) দলপতিকে বললেন-
আচ্ছা, তোমার আস্থাপূর্ণ এ বিষের শিশিটি আমাকে দাও। দলপতি শিশিটি হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদকে দিলো। হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ)
শিশিটি হাতে নিয়ে ব দেখ, এ পৃথিবীর কোনো বস্তুর মধ্যে প্রকৃত ক্ষমতা নেই। যখন আল্লাহ তাআলা তার মধ্যে কোনো ক্ষমতা দেন কখনই
সে ক্রিয়াশীল হতে পারে। এর পূর্বে নয়। আমি আল্লাহর তাআলার নামে এ দোয়া পড়ে তোমার এ বিষের শিশি পান করছি, তারপর দেখ আমার মৃত্যু হয় কিনা?
‘‘বিসমিল্লাহিল্লাজি-লা-ইয়াদুররু-মা'আ ইসমিহি শাইয়ূন ফিলআরদি ওয়ালা ফি ওয়া হুয়াস্সামিইয়ুল-আলিম’’
এ দোয়া পড়ে হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ) বিষ পান করলেন।
দলপতি বললো,
দেখুন আপনি নিজের প্রতি অবিচার করবেন না। এটা খুবই কঠিন প্রকৃতির বিষ। বিষ পান করার পর আল্লাহ তাআলা তার শক্তির কারিশমা প্রদর্শন করলেন।
দলপতি খালেদ (রাঃ) এর দিকে চোখ বড় বড় তাকিয়ে রইলো। তিনি পুরো শিশির বিষ পান করে ফেললেন। অথচ তার শরীরে কোথাও মৃত্যুর কোনো নিদর্শন নজরে পড়লো না। এ দৃশ্য দেখে দলপতি মুসলমান হয়ে গেলো।
মূলত সাহাবায়ে কেরামের অন্তরে এটা পরিণত বিশ্বাস ছিলো। তারা শতভাগ বিশ্বাস করতেন, এ পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে তা আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা ও নির্দেশেই ঘটে। বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার প্রতি পূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে অগ্রসর হয়, তখন আল্লাহ তাআলা তার বিস্ময়কর শক্তির প্রকাশ ঘটান।
,
সুবহানাল্লাহ

No comments:

Post a Comment